আগরতলা : অধিনায়ক বদলে গেলেও জিততে সমস্যা হল না চেন্নাই সুপার কিংসের। ঘরের মাঠে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৬ উইকেটে হারাল তারা। শুরুটা ভাল করলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। বল হাতে চেন্নাইয়ের নায়ক মুস্তাফিজুর রহমান। ব্যাট হাতে ভাল খেললেন রাচিন রবীন্দ্র, শিবম দুবে ও রবীন্দ্র জাডেজা। আরও এক বার হার দিয়ে আইপিএল শুরু হল বিরাট কোহলিদের।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুটা ভাল করেছিলেন ফাফ ডুপ্লেসি। প্রথম ওভার থেকেই হাত খোলা শুরু করেন তিনি। প্রথম চার ওভারের সিংহভাগ বল তিনি খেলেন। দীপক চাহারের এক ওভারে চারটি বাউন্ডারি মারেন আরসিবি অধিনায়ক। প্রথম ৪ ওভারেই ৩৭ রান ওঠে। পঞ্চম ওভারে মুস্তাফিজুরের হাতে বল তুলে দেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ। সেই ওভারেই খেলার ছবি বদলে যায়। ভয়ঙ্কর দেখানো ডুপ্লেসিকে ৩৫ রানের মাথায় আউট করেন তিনি। বড় শট মারতে গিয়েছিলেন ডুপ্লেসি। বলের গতির হেরফের হওয়ায় বল বেশি দূর যায়নি। আউটফিল্ডে ভাল ক্যাচ ধরেন রবীন্দ্র। সেই ওভারেই শূন্য রানে আউট হন রজত পটীদার।
পরের ওভারে বেঙ্গালুরুকে বড় ধাক্কা দেন চাহার। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে শূন্য রানে ফেরান তিনি। কোহলি শুরুতে বেশি বল খেলতে পাননি। ৩ উইকেট পড়ার পরে কয়েকটি বড় শট খেলেন। রান তোলার গতি বাড়াতে গিয়ে সেই মুস্তাফিজুরের বলেই ফেরেন কোহলি। ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন তিনি। বাউন্ডারিতে ক্যাচ ধরেন অজিঙ্ক রাহানে। ২১ রান করেন কোহলি। সেই ওভারে ক্যামেরন গ্রিনকেও আউট করেন মুস্তাফিজুর। বাংলাদেশের পেসারের দাপটে ৭৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় আরসিবির।
দেখে মনে হচ্ছিল, বেশি রান করতে পারবে না আরসিবি। কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে টানলেন তরুণ অনুজ রাওয়াত ও অভিজ্ঞ দীনেশ কার্তিক। গত মরসুম ভাল যায়নি কার্তিকের। কিন্তু এ বার প্রথম ম্যাচে ভাল খেললেন তিনি। রাওয়াত গত বার নিয়মিত সুযোগ পাননি। যে কয়েকটি ম্যাচে খেলেছিলেন ভাল ব্যাট করেছিলেন। এ বার প্রথম ম্যাচেই জাত চেনালেন তিনি। পেসারদের বিরুদ্ধে সাবলীল ভাবে বড় শট খেলছিলেন তিনি।
৬০ বলে ৯৫ রানের জুটি বাঁধলেন দুই ব্যাটার। শেষ বলে রাওয়াতকে রান আউট করেন ধোনি। তার আগে অবশ্য দলের রানকে লড়াইয়ের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে আরসিবি। রাওয়াত করেন ৪৮ রান। কার্তিক ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
১৭৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করে চেন্নাইও। ডেভন কনওয়ে না থাকায় রুতুরাজের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন রবীন্দ্র। প্রথম ম্যাচেই নজর কাড়লেন এই বাঁ হাতি ব্যাটার। দ্রুত রান তুলছিলেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার। চেন্নাইকে প্রথম ধাক্কা দেন বেঙ্গালুরুর ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার যশ দয়াল। ১৫ রানের মাথায় রুতুরাজকে ফেরান তিনি। রবীন্দ্র বড় শট খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে কর্ণ শর্মার বলে আউট হন তিনি। ১৫ বলে ৩৭ রান করেন রবীন্দ্র।
উইকেট পড়লেও চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমেনি। রাহানে ও ড্যারিল মিচেল দু’জনেই শুরু থেকে হাত খুলে খেলছিলেন। প্রতি ওভারে বড় শট মারছিলেন তাঁরা। প্রথম ১০ ওভারে ৯২ রান ওঠে। শেষ ১০ ওভারে চেন্নাইয়ের জিততে দরকার ছিল ৮২ রান। খেলার রাশ ধোনিদের দিকেই বেশি ছিল।
লড়াই ছাড়েনি বেঙ্গালুরু। তাদের ম্যাচে ফেরান গ্রিন। প্রথমে ২৭ রানের মাথায় রাহানে ও তার পরে ২২ রানের মাথায় মিচেলকে আউট করেন তিনি। চেন্নাইকে জেতানোর দায়িত্ব গিয়ে পড়ে রবীন্দ্র জাডেজা ও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা শিবম দুবের কাঁধে।
শেষ পাঁচ ওভারে চেন্নাইয়ের জিততে দরকার ছিল ৪৬ রান। তাড়াহুড়ো না করে ঠান্ডা মাথায় দলকে জয়ে নিয়ে গেলেন জাডেজা ও শিবম। খারাপ বলে বড় শট মারলেন। নইলে দৌড়ে রান নিলেন। ফিল্ডিংয়েও কিছু ভুল করল আরসিবি। তার খেসারত দিতে হল তাদের। শেষ পর্যন্ত ৮ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে গেল চেন্নাই। শিবম ৩৪ ও জাডেজা ২৫ রানে অপরাজিত থাকলেন।