আগরতলা : ত্রিপুরার বিধ্বংসী বন্যা পরিস্থিতিকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করার দাবি এবার করলেন সারা ভারত কৃষকসভার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ হান্নান মোল্লা। মঙ্গলবার রাজ্য কৃষক ভবনে এক সাংবাদিক সন্মেলনে তিনি বলেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সোমবার রাজ্য কমিটির সভায় তাদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন’চোখে না দেখলে এই বন্যার ভয়াবহতা বিশ্বাস করা কঠিন’।এই ভয়াবহ বন্যার ফলে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।প্রায় ১৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের রক্ষায় ত্রিপুরার এই বন্যাকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করার দাবি কৃষক সভা জোরদার ভাবে করবে বলে ঘোষনা দেন সারা ভারত কৃষক সভার সহ সভাপতি। তিনি বলেন বিষ্ময়করভাবে ত্রিপুরা সরকার রাজ্যকে রাষ্ট্রীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করার দাবি করছে না। তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি করে তাঁর চেয়ারকে হয়তো নড়বড়ে করে তুলতে চাইছেন না। কিন্তু সেটা রাজ্যের জন্য বিশাল ক্ষতি করে দিচ্ছেন সেটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন কৃষক সভা ঠিকই জাতীয় বিপর্যয়ের জন্য দাবি করবে এটা এই রাজ্যের মানুষেরও দাবি।তিনি বলেন কৃষকসভার সদস্যরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রথম দিন থেকেই ত্রানে নেমে পড়েছেন ।এরমধ্যে আমাদের এক সাহসী সদস্য জহির উদ্দিন মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে বিষাক্ত পোকার কামড়ে মারাও গিয়েছেন,এই সব ক্ষেত্রেই প্রশাসনের মানবিক মুখ দেখা গেল না বলে হান্নান মোল্লা অভিযোগ করেন।তিনি বলেন রাজ্য কমিটির সভায় একাধিক জেলা থেকে ভয়ঙ্কর অবস্থা উঠে এসেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।এই ক্ষতি রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটাবে কেননা ধানের ক্ষেত, সবজি ক্ষেত গবাদিপশু, মৎস্য চাষ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে গেছে কৃষক ও কৃষি শ্রমিক।সমস্ত সংযোগকারী রাস্তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।কৃষকসভার রাজ্য কমিটির সভা থেকে দাবি জানানো হয়েছে ত্রিপুরার বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা, প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল প্রেরনের মাধ্যমে অতিসত্বর ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, প্রাথমিকভাবে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফান্ড থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা এই মুহূর্তে প্রদান, একই সাথে মৃত্যু হয়েছে এমন পরিবারগুলোর পরিবার পিছু এক কোটি টাকা ও একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক পবিত্র কর সহ অন্যরা।