গোর্খাবস্তি প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোম ও ডক্টর অমিত কুমার সিং এর বিরুদ্ধে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ এক রোগীর

আগরতলা : রাজধানী আগরতলার এডি নগর এলাকার অর্পিতা সরকার নামে এক মহিলার অভিযোগ শহরের গোর্খাবস্তি প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমে চিকিৎসার নামে তার সঙ্গে চরম প্রতারণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই বিষয়ে তিনি নিজেই সংবাদ মাধ্যমের কাছে লিখিত ভাবে জানাতে গিয়ে বলেন, গত মাসের সেপ্টেম্বর মাসের ৩ তারিখ প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমে আমার গলব্লাডার স্টোন মাইক্রো সার্জারি করে ছিল ডঃ অমিত কুমার সিং। তারপর একদিন আমাকে ছুটি দেয় নার্সিংহোম। কিন্তু এর পরিষেবা অত্যন্ত বাজে, সেটা আমি লিখিত আকারে অভিযোগ করে জমা দিয়েছি। খুবই কষ্ট হয়েছিল আমার দুটো দিন নার্সিংহোমে কাটাতে। তারপর সার্জারি শেষে পরদিন সন্ধ্যার দিকে আমি বাড়ি ফিরি কিছুদিন মোটামুটি কেটে যায়। কিন্তু হালকা ব্যথা ছিল পাঁচ পর আমি আবার একদিন ডক্টরকে দেখাই উনি আমাকে বলছেন এটা নাকি আমার সাইকোলজিকাল প্রবলেম। এটা উনার ডিপার্টমেন্ট নয় অর্থাৎ আমার ব্যথাটা মনের রোগ। ব্যথার ওষুধ খেয়ে খেয়েই কাটছিল সেই সঙ্গে এন্টিবায়োটিকও চলছিল।

হঠাৎ করে আমার আবার ব্যথা খুব বেড়ে যায় এবং সার্জারি জায়গাটা ফুলে যায়। ৮ অক্টোবর তারিখ আমি উনার কাছে আবার যাই এবং উনি দেখে বলেন যে ওই দিন বিকেল তিনটাতে আমাকে একটা মাইনর সার্জারি করতে হবে। আমি রাজি হই এবং ১৯ মামার সার্জারি করেন। উনি বলছিলেন এটা নাকি ব্যাকটেরিয়া এফেক্ট এবং আমার সাথে অনেকেরই দেখছি এটা হচ্ছে, সেটা প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমে গিয়েছে আমি বুঝতে পেরেছি অনেকেই এমন সমস্যার কথা বলাবলি করছিল এবং আমার সাথে কথা হয়েছে। নার্সিংহোমের প্রচুর গাফিলতি রয়েছে, সেনেটাইজ ঠিকমতো করে না ওরা কোন কিছু সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। উনি যখন মাইনর সার্জারিটা করলেন তারপর আমার ব্যথা আর কম ছিল না পরপর ড্রেসিংও কর ছিলাম আমি প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে খরচও করছিলাম। আমি যখনই প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমে যেতাম উনি আমাকে সেখান থেকে ভাগাতে চাইতেন, কারো সাথে কথা বললে উনি ভয় পেতে যেমন কেউ কিছু জেনে যাবে। কারণ ওখানে অনেকেরই এই সমস্যাগুলো হচ্ছিল। কোন অবস্থাতেই ব্যথা কমছে না আমি ব্যথার ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিক আবার কন্টিনিউ করতে থাকি। কিন্তু কোন অবস্থাতেই কমছে না ব্যথা, অপারেশনের জায়গার ফোলাটা দিন দিন বাড়ছে। তারপর আমি ১৬ অক্টোবর অবশেষে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে যাই সেখানে ডক্টর গৌরব শ্রীবাস্তবের কাছে যাই এবং উনি আমাকে কিছু টেস্ট ও সোনোগ্রাফি করান সোনোগ্রাফিতে ইনফেকশন ধরা পড়ে। ডক্টর বলছেন যে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার হয়নি, ওয়ান এমএল ইনফেকশন রয়ে গেছে। তারপর আমি ডক্টর অমিত কুমার সিংকে জানাই যে আমি সেটা মিডিয়াতে জানাবো তখন উনি ভয় পেয়ে আমাকে দুবার করে সেদিন রাতে ফোন করেন এবং উনি সে দায়িত্বটা নিতে চান । শ্যামলী বাজার ডঃ অমিত কুমার সিংয়ের কোন বন্ধুর নার্সিংহোমে আমাকে পুনরায় একটা সার্জারি করবেন বলেছেন কিন্তু টাকা পয়সার ব্যাপারে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। গত পরশু(বুধবার) সকালে ওনাকে আমি ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম যে এটা কি উনার নিজের দায়িত্বে করবেন নাকি আমাকে কিছু পেমেন্ট করতে হবে? উনি বলছেন পুরোটাই করতে হবে শুধু উনার হ্যান্ড চার্জ নেবেন না, তাছাড়া নার্সিংহোমে যাবতীয় খরচ সবকিছুই আমাকে দিতে হবে। এটা শুনে আমি বললাম যে কেন তাহলে তো আমি আই এল এস হসপিটালই করতে পারি, উনি বললেন আপনার তো অনেক পয়সা আছে আপনি কেন দেবেন না, যেহেতু আপনি আইএলএস হসপিটালে করতে চাইছেন তাহলে তো আপনি ওখানেও খরচ দিতেন। তারপর আমি আর কিছু কথা না বলে ফোন কেটে দিই। আইএলএস হসপিটালে পরিষেবা ভালো আমি কেন শুধু শুধু ফালতু আবার নার্সিংহোমে যাব তাই আমি বেসরকারি হাসপাতালে গতকালকে গিয়ে ভর্তি হই এবং সকাল দশটা নাগাদ আমার অপারেশন হয় পুরো এক ঘন্টা লেগেছে অপারেশনটা করতে। ওপেন সার্জারি করেন ডক্টর শ্রীবাস্তব। তখন দেখা গেল পাথর যেটা নাকি সবচেয়ে বড় সাইজ পাথর ছিল সেই একটা। পাথর রয়েই গেছে এবং সেটা থেকে ইনফেকশন হচ্ছে ও শেওলার মত জামে গেছে। এখন এক মাসের রেস্ট দিয়েছেন ডক্টর শ্রীবাস্তব এবং এক মাসের ওষুধ দিয়েছেন। ডক্টর অমিত কুমার সিং কোনভাবেই স্বীকার করতে রাজি নন যে এটা উনার গাফিলতি ছিল, উনি বারবার বলছেন এবং এবং বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বলছেন যে এটা ওনার কোন দোষ নেই উনার। নার্সিংহোমের কোন দোষ নেই অথচ নার্সিংহোমের মধ্যে অনেক ঘটনাই আমার স্বচক্ষে দেখা হয়ে গেছিল। আমার কথা হচ্ছে উনি তো বারবার ভয় পাচ্ছিলেন মিডিয়ার নাম শুনে আমাকে রাতে দু’বার ফোন করেছিলেন গত পরশু।

তাছাড়া ড্রেসিং এর জন্য যখন আমি প্রাইম কেয়ার নার্সিংহোমে যেতাম উনি সেটা চাইতেন না, যে আমি নার্সিংহোমে যাই উনি বরাবরই চেয়েছিলেন যে বাড়িতে ড্রেসিং করি বুঝতে পেরেছিলেন যে প্রথম দিনই আমি নার্সিংহোম সম্পর্কে কমপ্লেন করেছিলাম এবং আওয়াজ তুলে ছিলাম এটাতেও উনার ভয় ছিল যে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে সেই নার্সিংহোম সম্পর্কে এবং ডাক্তার সম্পর্কে। ওদের ভুল ত্রুটি ওরা আমার সাথেও করেছে তাই উনি ভয় পেতেন। উনি লোক পাঠাতে চাইতেন আমাকে বাড়িতে এড্রেসিং করানোর জন্য পরে অবশ্য আমি নার্সিংহোমে যাইনি আমি লোক ডেকেই বাড়িতে ড্রেসিং করিয়েছি। তারপর তো এই ১৬ তারিখ আইএলএস হসপিটালে দেখালাম ১৭ তারিখ এডমিট হই এবং সেদিন আমার অপারেশন হলো। আইএলএস হসপিটালে গতকাল অপারেশন করে যে একটা পাথর বের করা হয়েছে এবং তার আশেপাশের যে ইনফেকশন গুলো কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটার ছবি আপনাকে দিয়ে দিচ্ছি। আমি ভাবতে পারছি না ডক্টর অমিত কুমার সিং আমার মাইক্রো সার্জারি টা কি করলো উনি কি নেশাগ্রস্থ অবস্থায় করেছিলেন নাকি উনি চোখে দেখতে পান না যথারীতি তো ক্যামেরা ঢুকিয়ে এই সার্জারি গুলো করা হয় অথচ উনি কেন এই কাজটা করলেন ? আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। এখনো আমি শারীরিক যন্ত্রণা ও কষ্ট ভোগ করছি, ঈশ্বর দয়া করলে হয়তো বেসরকারি হাসপাতালের ডক্টর গৌরব শ্রীবাস্তবের চিকিৎসায় আমি নতুন জীবন পাবো কিন্তু এই ভোগান্তি আর টাকা পয়সা নষ্ট সেটা কি আর পূর্ণ হবে ? অতিমাত্রায় মেডিসিন খেতে খেতে শরীরের বিভিন্ন এফেক্ট দেখা দিতে পারে আমি অবশ্যই এই বিষয়টা নিয়ে মামলা করব, না হলে আমার কাছে আর কোন উপায় নেই।

Related posts

সরকারি দপ্তরে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে পথে নামলো বাম যুবরা

মশার উৎপাত বন্ধের দাবিতে সোচ্চার সিপিএম

শ্রমিকদের সুরক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে জাতীয় সুরক্ষা সপ্তাহে