অশান্ত মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা-নাটক! সমর্থকদের চাপে ‘সিদ্ধান্ত’ বদল

ইম্ফল : জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল যে শুক্রবারই পদ থেকে ইস্তফা দেবেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। জল্পনাকে সত্যি করে ইস্তফা দিতে রাজভবনের উদ্দেশে রওনাও দিয়েছিলেন তিনি। তার পরের ঘটনাক্রম পুরোদস্তুর নাটকীয়তায় ভরা। সমর্থকদের ‘চাপে’ বীরেনের ইস্তফা দেওয়া তো হলই না, উল্টে রাজ্যপালের কাছে যে ইস্তফাপত্রটি তিনি পেশ করতে যাচ্ছিলেন, সেটিও ছিঁড়ে ফেলা হল! শেষমেশ মণিপুর ইস্তফা দেওয়া হলো না মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং

জানা গেছে দুপুর ২টো ২০ মিনিটে ২০ জন দলীয় বিধায়ককে নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মণিপুরের বিজেপি শাসিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। কিন্তু ইম্ফলে নিজের বাসভবন থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন, সমর্থকেরা তাঁর বাড়ি ঘিরে রেখে দিয়েছেন। সমর্থকদের দাবি, ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে বীরেনকে। এর পর নিজের বাসভবনে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়, মণিপুরের পূর্তমন্ত্রীকে। তিনি ইস্তফাপত্রটি হাতে নিয়ে সমবেত জনতার সামনে পাঠ করতে শুরু করেন। সেই সময়ই কিছু মহিলা সমর্থক মন্ত্রীর হাত থেকে ইস্তফাপত্রটি ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেন। অশোক স্তম্ভের সিলমোহর দেওয়া সেই ছেঁড়া ইস্তফাপত্রের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ইস্তফা-রঙ্গের ইতি অবশ্য এখানেই হয়নি। মণিপুর সরকারের অন্যতম মুখপাত্র সাপাম রঞ্জন সিংহ জানিয়েছেন, সমর্থকদের চাপের মুখে কিছু মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানান। তার পর ওই মন্ত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে বেরিয়ে জানান, মুখ্যমন্ত্রী আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন।

গত মে মাস থেকে কুকি এবং মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধের কারণে উত্তপ্ত মণিপুর। এ ক্ষেত্রে বীরেনের সঙ্কট অবশ্য উভয়মুখী। বীরেন নিজে জাতিগত পরিচয়ে মেইতেই। কুকি-সহ জনজাতি গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ, গোষ্ঠীহিংসার সময়ে বীরেনের সরকারের আচরণ পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। জনজাতি অধ্যুষিত পাহাড় অঞ্চলগুলিতে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে মণিপুর সরকার অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই অঞ্চলে ‘পৃথক প্রশাসনের’ দাবি তুলেছে তারা। অন্য দিকে, রাজধানী ইম্ফল-সহ সমতল এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের অভিযোগ, মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালানো কুকি জঙ্গিদের মোকাবিলায় সময়োচিত পদক্ষেপ করা হয়নি। বিজেপির ইতিহাসে অবশ্য বীরেনের সাফল্য ‘ব্যতিক্রমী’। ২০১৬-র অক্টোবরে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে শামিল হওয়ার মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।

Related posts

টি এফ এ পরিচালিত কাজল স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা অর্জন করলো টাকারজলা দ্বাদশ

PACS to be computerized, multi-purpose PACS at Panchayat level Soon: CM

ফেন্সিডিল উদ্ধারের ঘটনায় জি আর পির জালে রাজ্য ও বহিঃরাজ্যের ৯ জন