আগরতলা : বিদ্যুৎ চুরি শুধু আইনের চোখে অপরাধ মাত্রই নয়, বিদ্যুৎ চুরি করতে গিয়ে বিপন্ন হতে পারে জীবন। এ রাজ্যে ইতিপূর্বে বিভিন্ন জায়গাতেই হুক লাইনের ছোবলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। অথচ হুক লাইনে বিদ্যুৎ চুরির প্রবণতা থেমে নেই। এমনকি বৈদ্যুতিক মিটারে পর্যন্ত চুরি করার মত ঘটনা ঘটে চলেছে। কিছু অর্থ সাশ্রয় করতে গিয়ে একদিকে যেমন আইনগতভাবে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, অন্যদিকে নিজের জীবনের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিদ্যুৎ চুরি চলছে। তবে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম আপামর জনসাধারণকে এ বিষয়ে সচেতন করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ চুরি বন্ধে আকস্মিক অভিযান এবং জরিমানাও করে চলেছে। এক্ষেত্রে থানায় মামলা করার মত সংস্থান থাকলেও পারতপক্ষে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ নিগম মামলা মোকদ্দমা এড়িয়ে চলার পক্ষপাতী। জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি কিছুটা জরিমানা করে আগামী দিনে যাতে বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এগিয়ে চলেছে। গত বছরের (২০২৩) এপ্রিল মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের ভিজিলেন্স দল মোট ৪৯৭ টি অভিযানে ২৬২৪ টি হুকলাইন ছিন্ন করেছে। ২৫০৮টি মিটার পরীক্ষা করার পর ৪৪৫টি মিটারে অনিয়ম ধরা ধরা পড়েছে। হুকলাইন এবং মিটারে অনিয়ম করার ঘটনার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম আধিকারিক এবং সকল স্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে ভিজিলেন্স দল মোট ১ কোটি ৭৩ লক্ষ ৬২ হাজার ২৫৫ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে। এরমধ্যে ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৪৪ টাকা আদায় হয়েছে। ৪৯৭ টি অভিযানে ২৬২৪টি হুক লাইন ছিন্ন করা এবং ৪৪৫টি মিটারে অনিয়ম ধরা পড়ার পরেও বিদ্যুৎ নিগমের ভিসিলেন্স দল আইন ভঙ্গকারীদের শুধুমাত্র জরিমানা আদায় করেই আগামী দিনে যেন এই অপরাধ আর না ঘটিয়ে থাকেন, সেজন্য তাদের মুচলেখা আদায় করেছে। কিন্তু একটি ক্ষেত্রে পুলিশের সাহায্য নিয়ে মামলা করতে বাধ্য হয়েছে। রাজ্যের প্রত্যেকটি বিদ্যুৎ সাব ডিভিশনেই এই অভিযান সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী দিনে এই অভিযান আরো তীব্রতর করা হবে। কারণ এই বিদ্যুৎ চুরির কারণে সাধারণ ভোক্তাদের যারা নিয়মিতভাবে বিদ্যুতের বিল প্রদান করছেন, তাদেরকেও অনাকাক্ষিতভাবে বৈদ্যুতিক ঝঞ্ঝাটের শিকার হতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ চুরির কারণেই বিভিন্ন সময়ে লাইনে গন্ডগোল হচ্ছে। অনেক সময় ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিংবা বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ পুড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যে কোন স্থানে হুকলাইন দেখলেই যেকোনো সচেতন নাগরিকের প্রতিবাদ করা প্রয়োজন কিংবা সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ দপ্তরের কার্যালয়ে জানানো প্রয়োজন। এতে ওই এলাকা অহেতুক বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে রক্ষা পাবে পাশাপাশি প্রাণহানি এবং সম্পদ হানিও রক্ষা করা যাবে।