আগরতলা : রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। কিভাবে যান দুর্ঘটনা রোধ করা যায় এনিয়ে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পরবর্তী সময়ে বৈজ্ঞানিক কারণগুলি তদন্ত করার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিযুক্ত করা এবং দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যান দুর্ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য খুব সহসাই ২০টি স্পিড রাডার গান ও ৮টি ইন্টারসেপ্টর যান মোতায়েন করা সহ একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সোমবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, রাজ্যে ১৬টি দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা এবং ৮০টি উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসকল এলাকায় যানবাহন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন জেলা পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সংঘটিত যান দুর্ঘটনাগুলির কারন, সময়, যানবাহনের ধরন, রাস্তার অবস্থা ইত্যাদি বিষয় বিশ্লেষনের জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে। জাতীয় সড়কের দুই পাশে সংস্কার সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পরিকাঠামোর উন্নয়নের উদ্দেশ্যে রাজ্য এবং জেলা স্তরে পূর্ত দপ্তর, পরিবহন দপ্তর, NHIDCL সহ অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলিকে নিয়ে নিয়মিতভাবে মিটিংয়ের আয়োজন করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো জানান, বিভিন্ন জায়গায় নাকা পয়েন্ট এবং চেক পয়েন্টগুলিতে ব্রেথ অ্যানালাইজার, স্পিড রাডার গান, বডি ওয়ার্ন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, ওয়্যারলেস সেট, রেট্রো রিফ্লেকটিভ টেপ/জ্যাকেট এবং লাইট বার ব্যাটন ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্হার উন্নয়নে বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম যেমন- রোড ব্যারিয়ার ট্রলি, রোড ডিভাইডার কোণ, রিফ্লেক্টিভ টেপ, সাইনবোর্ড এবং অন্যান্য বিশেষ উপকরন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ‘মোটর ভেহিকেল এক্ট’ মোতাবেক এবং এনফোর্সমেন্ট ড্রাইভের অঙ্গ হিসাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিতভাবে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে – ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্তকরন, ট্রেনিং প্রদানকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা ইত্যাদি। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক মাধ্যম, স্ক্রিন ডিসপ্লের মাধ্যমে বিশেষ প্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি ফ্লেক্স/পোস্টার এবং স্কুল/কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নিয়মিতভাবে কমিউনিটি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বিভিন্ন অংশে পুলিশ ও পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে যৌথ অভিযান করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ, এনজিওগুলিকে যুক্ত করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে পিক আওয়ারে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানও প্রচার করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে রাস্তা সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন রাস্তাঘাট সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০টি স্পিড রাডার গান ও ৮টি ইন্টারসেপ্টর যান মোতায়েনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সড়ক সহ রাজ্য সড়কগুলিতে নির্ধারিত গতি সীমা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া। সেই সঙ্গে রাজ্য ট্রাফিক পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের সড়ক পরিবহন দপ্তর রাজ্যে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য যৌথভাবে কাজ করছে।