ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউনূসের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ জয়শঙ্করের

আগরতলা : আগামী সপ্তাহেই বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক হতে চলেছে। আগামী ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারি ওমানের রাজধানী মাসকাটে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন (ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স) রয়েছে। ওই সম্মেলন চলাকালীন জয়শঙ্কর এবং তৌহিদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও নয়াদিল্লি থেকে এ বিষয়ে এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

 

বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। কখনও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে, কখনও ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারও বুঝিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের মন্তব্য তারা পছন্দ করছে না। কখনও হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে, আবার কখনও ভারতে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া হাসিনার মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হয়েছে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলির আবহে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সম্ভাব্য বৈঠক আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

 

গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকা সফরে যান। সেই সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দু’দেশের কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় তাঁর। ওই বৈঠকের আগে তৌহিদ জানান, ৫ অগস্ট (হাসিনার পতন)-এর পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। তা মেনে নিয়েই দু’দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন তিনি। ডিসেম্বরের ঢাকা সফরের সময়ে মিস্রী বুঝিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও আগের জমানার মতোই সুসম্পর্ক চায় নয়াদিল্লি। পাশাপাশি সে দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়েও ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেন ভারতের বিদেশসচিব।

 

 

ওই সময়ে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে মধ্যে জমা ‘মেঘ’ কাটানোর বিষয়ে কথা হয় দু’পক্ষের। ইউনূসের সরকার সেই সময়ে দাবি করে, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের অভিযোগগুলি উঠে এসেছে তার বেশির ভাগই ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক কারণে। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, গত বছরের ২১ অগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনও সংখ্যালঘুর মৃত্যুতে সাম্প্রদায়িক যোগ পাওয়া যায়নি।

 

তবে শেখ মুজিবের ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে তাণ্ডব এবং ভাঙচুরের ঘটনায় সম্প্রতি নিন্দা জানিয়েছে ভারত। মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, “শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের বীরোচিত প্রতিরোধের ঐতিহ্য বহন করে। ৫ ফেব্রুয়ারি সেই বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব যাঁরা বোঝেন, তাঁরা এই বাড়ির ঐতিহ্য এবং গুরুত্ব সম্পর্কেও অবহিত। এই ভাঙচুর এবং ধ্বংসলীলার কঠোর সমালোচনা করা উচিত।’’

Related posts

Centre approves Rs 288.93 Crore flood relief for Tripura

Tripura CM meets Union Ministers Dharmendra Pradhan, Ashwini Vaishnaw

রহস্যজনক মৃত্যু শিবনগরে ভাড়াঘরে কলেজ পড়ুয়ার