আগরতলা : সুস্থ সংস্কৃতির প্রসারে বিভিন্ন প্রয়াস নিয়েছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। রাজ্যের সকল অংশের মানুষের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, পরম্পরা ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই সরকার আন্তরিক। এর পাশাপাশি হারিয়ে যেতে চলা ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির প্রসারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের সাপ্তাহিক সংস্কৃতি হাটের বার্ষিক কর্মসূচি উপলক্ষে আজ আগরতলা সংলগ্ন সেন পাড়ায় আয়োজিত নববর্ষ উৎসবের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজকে এখানে অনুষ্ঠিত ঝুমুর নৃত্য পরিবেশনা খুবই মনোমুগ্ধকর হয়েছে। ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর এই হাটের উদ্বোধনে এসেছিলাম। দেখতে দেখতে ৭২টি রবিবার পার হয়ে গেলো। এধরণের বিরতিহীন কার্যক্রম করা এতটা সহজ নয়। এজন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা চাই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য সেটা এখানে প্রমাণিত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সরকার সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন প্রয়াস নিয়েছে। সংস্কৃতির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায়। সৃষ্টির মধ্যেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। টিভি, মোবাইলের দৌলতে আমরা অনেক কিছু ভুলতে চলেছি। আমরা সবাই এক, ঐক্যবদ্ধ। পয়লা বৈশাখের পর প্রথম রবিবার এখানে এই কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে। আগে বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ থেকেও শিল্পীরা এখানে এসেছেন বলে শুনেছি। এখন প্রত্যেক রবিবারে সংস্কৃতি প্রেমী মানুষ এখানে সমবেত হন। তাই আমরা এই কার্যক্রম জাতীয় স্তরে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। ডাঃ সাহা বলেন, আমি এই কার্যক্রম সম্বলিত ভিডিও ফুটেজ পাঠাবো। হতে পারে ‘মন কি বাত’ কার্যক্রমে যশস্বী প্রধানমন্ত্রী এই সম্পর্কেও বলতেও পারেন।
আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এধরণের কার্যক্রম সারা দেশে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। আয়োজকরা বলেছেন তারা এধরনের কার্যক্রম রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু করার চেষ্টা করছেন। আমি উদ্যোক্তাদের গ্রামীণ ক্রীড়ার উপর নজর দিতে বলেছিলাম। আর তারা সেই কথা রেখেছেন। আমাদের রাজ্যের ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠীর নিজ নিজ কৃষ্টি সংস্কৃতি রয়েছে। আমরা চাই সব ধরণের সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে একটা সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা। এজন্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর কাজ করছে। আমাদের রাজ্য সরকার বিলুপ্ত প্রায় যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, নাটক, কীর্তন ইত্যাদি সংস্কৃতির আরো প্রসারে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। রাজ্যে বর্তমানে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট হয়েছে। যেখানে জাতি জনজাতি অংশের ছেলেমেয়েরা সুযোগ পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিত শীল, আগরতলা বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের সভাপতি নির্মল কুমার দেব, আজকের ফরিয়াদ পত্রিকার সম্পাদক শাণিত দেবরায়, বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের সভাপতি সেবক ভট্টাচার্য, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক রমাকান্ত দে সহ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগণ।