আগরতলা : বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ বলেন, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে এই খাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পৃথক বিদ্যুৎ সংযোগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে চিকিৎসা পরিষেবায় কোনওরকম বিঘ্ন না ঘটে।

 

মন্ত্রী বলেন রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবার সম্প্রসারণ এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এর যোগান নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে ও বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছে I

 

আজ মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের রাণীরবাজারে ৩৩ কেভি সাব-স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০.৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই সাব-স্টেশন।

 

মন্ত্রী জানান বিদ্যুৎ সাধারণত কয়লা, গ্যাস, জল, বায়ু ও সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন হয়। আমাদের রাজ্যে গ্যাস থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কিন্তু বর্তমানে গ্যাস ও কয়লার পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকনির্দেশ অনুসারে ত্রিপুরা সরকার ও বিদ্যুৎ দপ্তর সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।

 

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্রাহক ছিলেন। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৩১ লক্ষে।

 

“সাত বছরে ৩.৩১ লক্ষ নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন। যেখানে গত ৩৫ বছরে মাত্র ১২টি ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছিল, আমরা ইতিমধ্যেই ২০টি সম্পূর্ণ করেছি। আগে ১৩২ কেভি লাইনের দৈর্ঘ্য ছিল ৪৮৫ কিলোমিটার, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯৮৬ কিলোমিটার। ৩৩ কেভি সাব-স্টেশনের সংখ্যা ৪২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৪। ১১ কেভি সাব-স্টেশন ১৬,৮২১ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১,৫৯৮। আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল আগে ছিল মাত্র ৯৫ কিমি, এখন তা ৫৭১ কিমি। আগে প্রিপেইড মিটার ছিল না—এখন ১,৬১,৭০০টি প্রিপেইড মিটার এবং ৭১,৯৪৬টি স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে।”

 

তিনি জানান, ‘হুক লাইন’-এর অপব্যবহার বন্ধ করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

 

মন্ত্রী বলেন হুক লাইন সনাক্ত করতে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করেই ‘লাইভ লাইন’-এ কাজ করার নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

 

তিনি জানান রানির বাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য পৃথক বিদ্যুৎ সংযোগের পরিকল্পনা চলছে। একইভাবে রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালেও এমন সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

মন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ গ্রিডকে আরও শক্তিশালী করতে সূর্যমণিনগরে একটি ৪০০ কেভি সাব-স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

 

তিনি বলেন, “১৮০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ পরিবহন অবকাঠামো আধুনিকীকরণ প্রকল্প বর্তমানে চলমান। ৯টি নতুন ১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের মধ্যে ৮টি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, একটি নির্মাণাধীন। ৭টি পুরনো ১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আগরতলা ৭৯ টিলা থেকে রুখিয়া পর্যন্ত পুরনো লাইনে নতুন প্রযুক্তির কেবল সংযুক্ত করা হচ্ছে।

Related posts

Emergency was a direct attack on Constitution, democracy: CM

পূর্ব থানার পুলিসের জালে নেশা সামগ্রী সহ চারজন

জরুরি অবস্থা ছিল সংবিধান ও গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আক্রমণ: মুখ্যমন্ত্রী