আগরতলা : রাজ্যে রেল লাইনের বিদ্যুতায়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আর এই কাজ সম্পন্ন হলে খুব সহসাই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যাত্রী পরিষেবা দেওয়া শুরু করবে। রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজে বিশ্বাস করে। কাজের গুণগত মানের সঙ্গে কখনো আপোষ করবে না এই সরকার। রাজ্যের সকল অংশের মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুফল পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গিকার নিয়ে কাজ করছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে মঙ্গলবার পশ্চিম জেলার জিরানিয়ায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মহকুমা হাসপাতালের ভূমি পূজন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
উদ্বোধকের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে হাসপাতালগুলির অবস্থা অতীতে সন্তোষজনক ছিল না। তবে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর থেকে মানুষ এখন স্বাস্থ্য পরিষেবায় গুণগতমান সম্পন্ন চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। ডাঃ সাহা বলেন, সরকারি কাজ বলেই দায়সারাভাবে করার গতানুগতিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারি যে কোন কাজই হোক না কেন সেটা গুনগতমান বজায় রেখে করা এই সরকারের অন্যতম মূল লক্ষ্য। তাই যারা কাজের দায়িত্বে থাকবেন তাদের সবসময় গুনমান বজায় রাখার উপর নজর দিতে হবে। যাতে সবকিছু উচ্চমানের হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদাই কাজের গুণগত মানের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আমরা পরিকাঠামো উন্নয়নে কোন ঘাটতি রাখতে চায় না।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে জিবি হাসপাতালে ৯টি সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। আগে চিকিৎসার জন্য রাজ্যের বাইরে যেতে হতো। কিন্তু এখন রাজ্যে উন্নত মানের চিকিৎসার সুবিধা হওয়ায় রেফারেল কেইসের সংখ্যা কমেছে। এখনো অনেকে চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আসেন। সরকারি সাধ্যের মধ্যে তাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু এরপরেও সরকারিভাবে তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা থেকেই ‘মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’ চালু করা হয়। আজ অবধি প্রায় ২.৫০ লক্ষ মানুষ নিজেদের নাম এই প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করেছেন। সরকারের টার্গেট ৪.১৫ লক্ষ পরিবারকে প্রকল্পের আওতায় আনা।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার সকল অংশের জনগণের সমস্যা সমাধানে পাশে থাকতে চায়। খুব সহসাই রাজ্যে আরও ১০০টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এজন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই সরকার সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সুবিধা প্রদানের জন্য কাজ করছে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিকল্পে সরকার ট্রমা কেয়ার সেন্টার ও কার্ডিয়াক সেন্টার স্থাপন করেছে। দুর্ঘটনায় আশঙ্কাজনক রোগীদের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের সবকটি জেলাতেই ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। এই সরকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপর ব্যাপক জোর দিয়েছে এবং জনগণের সার্বিক কল্যাণের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে হিরা মডেল চালু করেছেন। আমাদের এখন ভিস্তা ডোম রয়েছে, যা আমরা আগে কখনো ভাবতে পারি নি। খুব শীঘ্রই রেল লাইনের বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হবে এবং বন্দে ভারত এক্সপ্রেসও চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী মানেই উন্নয়নের প্রতীক। উন্নয়নের জন্য রাজনীতির প্রয়োজন নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সব সময় মানুষের কথা ভাবেন। এই সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে বিশ্বাসী। এই সরকার কখনো দুর্নীতিতে লিপ্ত হবে না। আর অন্যদেরও সেটা করতে দেওয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্তে, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব দেববর্মা সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতাল নির্মাণের অনুমিত ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪১.৫৩ কোটি টাকা।