আগরতলা : সোমবার বিকেলে রাণীরবাজারের গীতাঞ্জলি হলঘরে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১০টি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ ৭৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে সংবর্ধিত করলেন ত্রিপুরা সরকারের পরিবহণ/পর্যটন/ খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী তথা মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, শুধু নিজেকে নিয়ে থাকলেই হবে না, সমাজের জন্য ভাল কিছু করার মানসিকতা নিয়ে তোমাদের চলতে হবে। এতে সমাজ এবং দেশ উপকৃত হবে। তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা হচ্ছে আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। গোটা সমাজ তাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রতিযোগিতার যুগ। এই প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকার জন্য সব বিষয়ে জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক। জীবনে সাফল্য পেতে গেলে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। একজন সফল ব্যক্তিকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়। শুধু পড়াশোনা নয়, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীর চর্চা ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের সম্মান করতে হবে। বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবা যেন অবহেলার শিকার না হন, সে বিষয়ে তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এক কথায় পড়াশোনা করা, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ সবের সাথে নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে সহজ পথে কোনও কিছু পাওয়া যায় না। তার জন্য অনেক পথ হাঁটতে হয়। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। শুধুমাত্র একজন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার মধ্যে নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থির করে রাখা উচিত নয়। তিনি বলেন, সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যেই মেধা রয়েছে। শুধুমাত্র একটু পরিশ্রম করলেই সেই মেধার বহিপ্রকাশ ঘটে। তাই একবারের প্রচেষ্টায় কোনও কিছু না পারলে মনোবল না হারিয়ে আরেকবার সেই চেষ্টা করতে হবে। নিজের চিন্তাধারাকে জীবনমুখী করে তুলতে হবে। নিজের গুণ দিয়ে সবকিছুকে জয় করতে হবে। নিজেকে একজন সুনাগরিক হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, সমাজের একজন সুনাগরিক হিসেবে সমাজকে স্বচ্ছ রাখার জন্য সবার কিছু না কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এই কৃতী ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের বাবা-মা, স্কুল সহ গোটা এলাকার নাম সারা রাজ্যে উজ্জ্বল করেছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতাকে জয় করে তাঁরা তাঁদের জীবনের বড় পরীক্ষাতে সফল হয়েছে। তাঁদের লড়াই কে কুর্নিশ জানাতে এবং তাঁদের আনন্দের ভাগীদার হতে ও আগামীর শুভকামনা জানাতেই আজকে আমার এই ক্ষুদ্র আয়োজন।
এদিনের অনুষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে শুভেচ্ছা সরূপ মানপত্র, ফুলের তোড়া ,ডাইরি ,কলম মোমেন্টো তোলে দিলেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, আজকের অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ছাত্র-ছাত্রীরা নতুন আশা নিয়ে উচ্চশিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে আলোকিত মানুষ হিসাবে দেশের এবং রাজ্যের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার দৃপ্ত প্রতিজ্ঞা করবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও পারদর্শী হয়ে নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে তাঁরা গড়ে তুলবে। তাঁদের শিক্ষা গ্রহণে এবং ভালো ফলাফলের জন্য যেসব মানুষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবদান রেখেছেন, তাঁদের কথা সব সময় তাঁরা মনে রাখবে।